ঢাকা,  সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ,

 বন্যা আতঙ্কে ঘর ছাড়ছে মানুষ

# পানির চাপে খোলা হলো তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট # সতর্কতায় মাইকিং

সারাবাংলা

 জেলা প্রতিনিধি,  লালমনিরহাট

প্রকাশিত: ১৭:৪৭, ৪ অক্টোবর ২০২৩

আপডেট: ১৯:৩৫, ৪ অক্টোবর ২০২৩

# পানির চাপে খোলা হলো তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ গেট # সতর্কতায় মাইকিং

ফাইল ছবি

ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উজানে ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। প্রবল পানির চাপে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নদীর দুই পারের মানুষকে সতর্কতা অবলম্বনে মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন।

বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


এদিকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ শুরু করেছে। চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গিয়ে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার আশঙ্কায় অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।


জানা গেছে, জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চলে এরইমধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। চরাঞ্চলেও পানিতে ডুবেছে বাড়িঘর ও রাস্তা ঘাট।

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গীমারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর ও গোকুণ্ডা এলাকার মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন।

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, তিস্তা পাড়ে রেড এলার্ট শুনে তিস্তা চরের মানুষদের সরে যেতে বলা হয়েছে। অনেকে বিভিন্ন স্কুল ও উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লোকমান হোসেন তিস্তা ব্যারাজ এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, আমরা নদী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাইকিং করে মানুষকে সচেতন করতে বলেছি। সার্বিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লোকজনদের প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।


লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ভারী ঢলে তিস্তায় আবারও বন্যা দেখা দিতে পারে। আমরা সার্বিক খোঁজখবর রাখছি।