ঢাকা,  সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ,

মা-বাবা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যার কারণ জানালো পুলিশ

সারাবাংলা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ৩১ জানুয়ারি ২০২৪

মা-বাবা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যার কারণ জানালো পুলিশ

নিহত বিকাশের ভাগনে রাজীবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে বিরোধের জের ধরেই সিরাজগঞ্জে তিন জনকে হত্যা করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার আসামি রাজীব কুমার ভৌমিক (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদে বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাড়াশ পৌর শহরের বারোয়ারি বটতলা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে তিন জনের লাশ উদ্ধারে কাজ করে পুলিশ।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল।


এর আগে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে তাড়াশ থেকে নিহত বিকাশের ভাগনে রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজীব সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের মৃত বিশ্বনাথ এবং নিহত বিকাশের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে। আগের দিন যখন বিকাশদের খোঁজ মিলছিল না তখন খালাতো ভাই ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে রিপোর্ট করতে থানাতেও গিয়েছিল সে।


পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি রাজীব জানায়, হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক এবং ভিকটিমরা পরস্পর আত্মীয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকারের বড়বোন প্রমিলা রানীর ছেলে রাজীব। হত্যাকারীর বাবা সরকারি চাকরি করতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর তার পেনশনের টাকা দিয়ে ২০২১ সাল থেকে মামা বিকাশের সঙ্গে যৌথভাবে খাদ্যশস্য কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত হয় সে। বিকাশ চন্দ্র ভাগনে রাজীবকে ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ২০ লাখ টাকা দেন। এরপর ব্যবসা চলমান থাকাকালে রাজীব তার মামাকে বিভিন্ন ধাপে ব্যবসার লভ্যাংশসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা দেয়। চলতি বছরে এসে বিকাশ অতিরিক্ত ৩৫ লাখ টাকা দাবি করেন।

‘বিকাশ গত ২২ জানুয়ারি দাবি করা টাকা সাত-আট দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়ার জন্য অনেক চাপ দেন এবং রাজীব ও তার মাকে ফোনে অনেক বকাবকি করেন। রাজীব টাকা ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং মামার বকাবকিতে মামাসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরপর শনিবার বিকালে মামাকে ফোন করে পাওনা টাকা নিয়ে বাসায় আসতে চায় রাজীব। বিকাশ চন্দ্র তাড়াশের বাইরে থাকায় ভাগনেকে টাকা নিয়ে বাসায় আসতে বলেন।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘রাজীব বাসায় গিয়ে মামার অনুপস্থিতির সুযোগে মামি এবং মামাতো বোন তুষিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। একপর্যায়ে তাকে কফি খাওয়ানোর জন্য মামি সন্ধ্যাকালীন পূজা শেষে বাসার নিচে দোকানে কফি প্যাকেট কিনতে যান। সে সময় রাজীব ব্যাগে করে আনা লোহার রড দিয়ে মামাতো বোনের মাথায় আঘাত করে। তার মামি বাসায় প্রবেশ করলে তাকেও একইভাবে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। দুজনকে আঘাত করার পর সে চলে যেতে চায়। এর মধ্যেই তার মামা বাসায় চলে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মামা বাসায় ঢুকলে তার মামাকেও রড দিয়ে আঘাত করে। এরপর তিন জনকে গলা কেটে হত্যা করে।’

এসপি জানান, আসামি রাজীবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. সামিউল আলম, উল্লাপাড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত কুমার সূত্রধর, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ওসি জুলহাজ উদ্দীন, তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।