ঢাকা,  সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ,

গাজীপুরে দুই দিন ব্যাপী পৌষ মেলা ও পিঠা উৎসব শুরু 

সারাবাংলা

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০৬, ১৯ জানুয়ারি ২০২৪

গাজীপুরে দুই দিন ব্যাপী পৌষ মেলা ও পিঠা উৎসব শুরু 

ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতার ৫২ বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য পৌষমেলা ও পিঠা উৎসব শুরু হয়েছে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার তরগাঁও লাতাপাতা বাজার সংলগ্ন আফজালুন্নেছা সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। 

আজ শুক্রবার (১৯ জানুয়ারী) দুইদিন ব্যাপী এই পৌষমেলা ও পিঠা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের কৃতীসন্তান, দেশবরেণ্য লেখক, কলামিস্ট, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পূরধা ব্যক্তিত্ব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপচার্য, পৌষা মেলা ও পিঠা উৎসব আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা.শহীদুল্লাহ সিকদার।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, সঞ্চালনা করেন মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ গনি, উপস্থিত ছিলেন আয়োজক কমিটির প্রচার সম্পাদক আব্দুল আলিম, চলচ্চিত্র পরিচালক মনজুরুল ইসলাম মেঘ এছাড়াও রাজনৈতিক, সমাজিক, সাংষ্কৃতিক, সাহিত্যিক অঙ্গনের তারকামুখ ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

মেলায় পিঠা ও পায়েশের দোকান নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে সারাদেশের এবং গাজীপুরে বিখ্যাত পিঠার দোকান। শতাধিক দোকানে হাজারো বাহারী শীতের পিঠা। বাঙ্গালীর ঐতিহ্য ফুটে তুলতে পিঠা, পায়েশ, মিষ্টি, দই, মুড়ি-মুড়কিসহ নানা পদের মুখরোচক খাবার ও খেজুরের রস ও রসের তৈরী বিভিন্ন খাবার। 

পৌষ মেলায় আগতদের আনন্দ বিনোদনের জন্য আছে নাগরদোলা, চরকি, রেলগাড়ী, নৌকাদোলা প্রভৃতি খেলা। মাটির তৈরী বিভিন্ন খেলনা, তৈজসপত্র কিনতে পারবেন সুলভ মূল্যে। হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের নানা পণ্য ক্রয় করতে পারবেন অল্প মূল্যে। 

মেলায় আগতদের বিনোদনের জন্য আজ প্রথম দিন দুপুর ২ টা থেকে বাঙ্গালীর নিজস্ব জারী গান শুরু হয়েছে। গানের সুরে সুরে, পিঠার স্বাধে শীতের বিকাল হয়ে উঠছে আনন্দের একটুকরো স্বপ্নীল সোনালী গোধুরী ও নিশীতের সন্ধ্যা। দিনভর পিঠা পায়েশ আর গানে গানে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য স্পর্শ করতে সমবেশত হয়েছে হাজারো বাঙালী। 

আগামীকাল শনিবার মেলায় আগতদের বিনোদনের জন্য বিকালে থাকবে বাউল গান। মেলায় আগত এবং অসহায় দরিদ্রদের জন্য দুইদিন ফ্রি মেডিক্যাল সেবা প্রদান করবে আফজালুন্নেছা সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। 

উৎসব আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা.শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন আমাদের নগর সভ্যতায় বাঙ্গালীর ইতিহাস ঐতিহ্য আজ হুমকির মুখে। শহরে বড় হওয়া সন্তানরা জানেনা বাঙ্গালীর বর্নাঢ্য সংস্কৃতি-ঐতিহ্য। নতুন প্রজন্মকে আমরা আমাদের শিকড় সংস্কৃতি, আদি সংস্কৃতি শিখাতে চাই। আগামি প্রজন্মের কাছে আমরা আমাদের সংস্কৃতি তুলে ধরে তাদের মেধা ও মনন বিকশিত করতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলেতে যে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, সেটি বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের নতুন প্রজন্মকে সেই ভাবে গড়ে তুলতে হবে। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই মেলা শুরু হলেও এখন গাজীপুর তথা সারা বাংলাদেশে এই মেলার গুরুত্ব ফুটে উঠেছে। 

ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী একজন সংস্কৃতিবান্ধব প্রধানমন্তী, সাংস্কৃতিক উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন, মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ দূূর করে তিনি বাঙ্গালীর নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার উপরে গুরুত্ব দিয়েছেন আমরা সেই কাজে সহযোগিতা করছি। পৌষমেলা ও পিঠা উৎসব নিয়ে আমরা একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মান করছি, এটির মাধ্যমে সারাপৃথিবীতে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটি তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমরা সেই সোনারবাংলা গড়ে তোলার সঙ্গী হিসেবে কাজ করছি। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বাঙ্গালীর নিজস্ব সংস্কৃতির প্রচার ও চর্চা করতে আমরা প্রত্যেক উপজেলায় পিঠা উৎসব আয়োজন করবো। এই মেলা ও পিঠা উৎসবের তাৎপর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিগন মেলা পরিদর্শন করেন। আগত অতিথিদের শীতের পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।