ঢাকা,  সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ,

ভোটের সকালে ব্যালট বাক্স খালি কি না দেখতে বললেন সিইসি

সারাবাংলা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:১৮, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩

ভোটের সকালে ব্যালট বাক্স খালি কি না দেখতে বললেন সিইসি

ছবি: সংগৃহীত

আগের রাতে ভোট কেটে নেয়ার সন্দেহ থাকলে ভোটের দিন সকালে পোলিং এজেন্টদের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স খালি আছে কি না- প্রার্থীদের তা দেখে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেছেন, ‘ব্যালট পেপার ভোটের দিন সকালে না গিয়ে যদি ১০ দিন বা ১০ মাস আগেও কেন্দ্রে যায়, তাহলেও প্রার্থীরা সকালে ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করে তাদের পোলিং এজেন্টদের দিয়ে ব্যালট বাক্সগুলো খালি কি না- সেটা দেখে নিতে পারেন। আমরা প্রার্থীদের আস্থা অর্জনের জন্য বলেছি ব্যালট পেপার কেন্দ্রে সকালে যাবে। পোলিং এজেন্টরা অবশ্যই সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ব্যালট বাক্সগুলো খালি আছে কি না দেখতে পারেন।’

মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে সকালে নগরের এলজিইডি মিলনায়তনে চট্টগ্রামের প্রার্থীদের সঙ্গে এবং বিকেলে প্রশাসন ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সিইসি।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আগের রাতে ভোটের যে সমস্ত কথা প্রচলিত রয়েছে, আমরা নিরান্নবই নয়, একশ শতাংশ নিশ্চিত করতে পারি- সেটি কোনো অবস্থাতেই হবে না। এ জন্যই অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সকালে যায়। ভোট যেখানে যায় বা দেয়া হয়, ওখান থেকে আরেক জায়গাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেটি আমরা শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি।

‘গণনা ও ঘোষণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে উপস্থিত থেকে দেখবেন- গণনা সঠিকভাবে হয়েছে কি না।’

ভোট গ্রহণে স্বচ্ছতার জন্য দুই ঘণ্টা পরপর নির্বাচন কমিশনের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ভোটাররা হালনাগাদ তথ্য দেখতে পারবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি অ্যাপ তৈরি করেছি, যেখানে দুই ঘণ্টা পরপর প্রতিটি কেন্দ্রে কত শতাংশ ভোট পড়ল তা ইনপুট দেয়া হবে। মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাপটি ডাউনলোড করে সেটি সবাই জানতে পারবেন।

‘অ্যাপটি তৈরির উদ্দেশ্য হচ্ছে, দশটার সময় দেখা গেল ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু ১২টার দিকে গিয়ে হঠাৎ ৮০ শতাংশ হয়ে গেল। এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে না। এজন্য আমরা বিভিন্ন পরিমাপক নিয়েছি, যাতে ভোট গ্রহণের সত্যতা মানুষের মাঝে ফুটে ওঠে।’

ভোটের সকালে ব্যালট বাক্স খালি কি না- দেখতে বললেন সিইসি
‘সংবাদকর্মী ও পর্যবেক্ষকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের সময় প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতি লাগবে না’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ফুটে উঠবে মিডিয়ার মাধ্যমে। কারণ মিডিয়ার কর্মীরা ভোটকেন্দ্রের বাইরেও থাকবেন এবং ভেতরে থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকদের প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতি নিতে হবে না। তারা সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ভেতরে ঢুকে সব ছবিই তুলতে পারবেন। সত্য-মিথ্যা জনগণকে জানাতে পারবেন।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সকালে আমরা প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। তাদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের প্রতি আমাদের যে নির্দেশনা ছিল সেটি জানিয়েছি। প্রার্থীরা আমাদের জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও মোটামুটি ভালো। পোস্টার ছেঁড়াছিড়ি, নির্বাচনি প্রচারণার অফিসে কেউ হয়ত আগুন লাগিয়ে দিয়েছে- এ রকম কিছু বিছিন্ন ঘটনার কথা তারা বলেছেন। তবে বেশিরভাগ প্রার্থী রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ প্রশাসনের প্রতি সন্তুটি জানিয়েছেন।’

মতবিনিময় সভায় কিছু প্রার্থী ভোট নিয়ে সন্দেহের কথা জানিয়েছেন। তাদের সেই বক্তব্যের সূত্র ধরে সিইসি আরও বলেন, ‘তাদের (প্রার্থী) মধ্যে দু-চারজন একটি কথা বলেছেন- ভোট দিয়ে কী লাভ হবে? ভোট তো এক জায়গায় চলে যাবে! আবার কেউ কেউ নাকি মুখে মুখে বলেছেন- আপনারা যে যেখানে ভোট দেন, ভোট জায়গামতো চলে আসবে।

‘আমরা এ ধরনের কথা শুনেছি। কিন্তু এর মধ্যেই আমরা জেনে গেছি যে, এটি ইচ্ছাকৃত অপপ্রচার অথবা ভ্রান্ত ধারণা। ভোট যেখানেই দেন সেখান থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, সেটি আমরা শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি।’

এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার সচিব মো. জাহাংগীর আলম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক, জেলার পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন।