ঢাকা,  সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ,

সিন্ডিকেট ভাঙতে কুমিল্লায় ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ

সারাবাংলা

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৫৪, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

সিন্ডিকেট ভাঙতে কুমিল্লায় ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ

৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ

কুমিল্লা নগরীতে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গতকাল বুধবারও একই দামে বিক্রি হয়েছিল। অনেক ব্যবসায়ী পেঁয়াজ স্টক করেছেন বেশি দামে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ। তারা বুধবার এবং বৃহস্পতিবার একই দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় বিপাকে পড়েছেন স্টক করা ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, ৮৫ টাকা ধরে গতকাল মাইকিং করে বিক্রি হয়েছিল প্রতি কেজি পেঁয়াজ। সেগুলো ছিল দেশি পেঁয়াজ। কম দামে পেঁয়াজ পেয়ে লাইন ধরে কিনছেন স্থানীয়রা। এতে বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতার চাপ কমে যায়। বুধবার নগরীর চকবাজারের শাহপরান স্টোরের সামনে এই দৃশ্য দেখা গেছে। বৃহস্পতিবারও একই দোকানে একই দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। তবে এদিন একই প্রতিষ্ঠান ভিন্ন দুটি স্থানে পেঁয়াজ বিক্রি করছে।


শাহপরান স্টোরের পরিচালক মো. লিটন বলেন, ‘বুধবার ৮৫ টাকা দরে একদিনে ১০ টন পেঁয়াজ বিক্রি করলাম। আজও চেষ্টা করছি। যা পেঁয়াজ আছে এবং রাতে যা এসেছে সবই বিক্রি করা হবে। কম লাভে বেশি বিক্রি হলে লোকসানের আশঙ্কা থাকে না।’


ক্রেতা মো. শহিদুল্লাহ চকবাজারের শাহপরান স্টোর থেকে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম এগুলো ভালো হবে না। এসে দেখি ভালো পেঁয়াজ। তবে দেশি পেঁয়াজ হওয়ায় আকারে ছোট।’

তিনি আরও বলেন, ‘চকবাজারের অন্য দোকানগুলোতে দেখলাম পেঁয়াজ খুচরা প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সেগুলো আকারে বড়। কিন্তু এই দোকানে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’


চকবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. পারভেজ বলেন, ‘ব্যবসায়ী লিটনের উদ্যোগটি চমৎকার। এতে ক্রেতারা যেমন সুলভ মূল্যে পেঁয়াজ পাবেন, তেমনি দেশি পেঁয়াজ জনপ্রিয়তা পাবে। দেশি উৎপাদনকারীরা উৎসাহিত হবেন। অনেকে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন পঁচার শঙ্কায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু না! এগুলো দেশি পেঁয়াজ। চকবাজারের অন্য দোকানগুলোতে এই ধরনের পেঁয়াজ তেমন নেই। ভারতীয় যেসব পেঁয়াজ আছে তাও ১০০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা সাধারণের সুবিধার জন্য এবং যেন কোনও সিন্ডিকেট কুমিল্লার বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজি করতে না পারে তাই আমাদের এই উদ্যোগ। এতে আমাদের দেশের ফসল চাষে চাষিদের উৎসাহিতও করা হলো। আমাদের এই উদ্যোগে সহযোগিতা করছেন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন এবং চকবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলী আশরাফসহ অন্যরা।’

ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তাদের এই উদ্যোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুবিধা লুটতে পারেনি। ভোক্তাদের সহযোগিতায় এভাবে এগিয়ে আসলে প্রশাসনকে আর জেল-জরিমানা করতে হয় না। আমরা নিয়মিত মনিটরিং করে দেখেছি কুমিল্লার বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম প্রথমদিকে তুলনামূলক বেশি ছিল। আমরা অভিযান চালানোর পর তা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু যখন ৮৫ টাকায় বিক্রি শুরু হয়, তখন তা আলোচনায় চলে আসে। এতে সিন্ডিকেট আর সুবিধা করতে পারে না। আর ভোক্তাও উপকৃত হয়। তবে ভারতীয় পেঁয়াজগুলো ১০০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদি ৮৫ টাকায় পেঁয়াজ না বিক্রি হতো তাহলে চাহিদাও বেশি থাকতো আর ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন আর এই সুবিধা নিতে পারবে না। আমরা ব্যবসায়ীদের বারবার বলছি ভোক্তা অধিকার আইন মেনে চললে আর আমাদেরও কঠোর হওয়ার প্রয়োজন হয় না।’

সবাইকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে সহযোগিতার আহবান জানান এই কর্মকর্তা।