ঢাকা,  সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ,

ফেলনা বোতলে পূজামণ্ডপের নান্দনিক গেট

সারাবাংলা

জেলা প্রতিনিধি, যশোর  

প্রকাশিত: ২২:২০, ২১ অক্টোবর ২০২৩

আপডেট: ২২:২০, ২১ অক্টোবর ২০২৩

ফেলনা বোতলে পূজামণ্ডপের নান্দনিক গেট

সাধারণত দুর্গাপূজায় মণ্ডপের গেট তৈরি করা হয় বাঁশ, খড় কিংবা ছন দিয়ে। তবে এবার ব্যতিক্রমী উদ্যোগে পূজামণ্ডপের গেট তৈরি করতে দেখা গেছে যশোরে। শহরের বিমানবন্দর সড়কের গোরাপাড়া সার্বজনীন মন্দিরের গেট তৈরি করা হয়েছে ফেলনা বোতল দিয়ে।


মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, অভিনব এ গেট তৈরিতে সাত হাজার ফেলনা বোতল ব্যবহার করা হয়েছে। গেটটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। পূজার গেটে নতুনত্ব আনতে ও পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

তারা আরও জানান, প্রায় ছয় মাস ধরে এসব পানির সাদা বোতল, ক্লেমনের সবুজ ও স্পিডের খয়েরি বোতল সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া গত দুই মাস ধরে ১৫-১৬ জন মিলে বোতলগুলো চিকন তার দিয়ে গেঁথে ফ্রেম তৈরি করেছে। এরপর তা বাঁশের তৈরি তোরণে বেঁধে তৈরি করা হয়েছে নান্দনিক এই গেট। পূজার প্রথম দিনেই এই গেট দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। মানুষের  এরকম সাড়া দেখে খুশি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।


গেট নির্মাণের মূল কারিগর সজিব দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিনব এই গেটে সাত হাজার ২০১টি খালি বোতল, প্রায় ১৫ কেজি পেরেক, ১০ কেজি তার এবং প্রায় ৩০ সিএফটি কাঠের বাটাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা ১৫/১৬ জন দুই মাস ধরে বোতলগুলো ফ্রেম আকারে সাজিয়েছি। এরপর বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ও শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুই দিন ধরে গেটটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া হয়েছে।

গোরাপাড়া সার্বজনীন মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপংকর দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা প্রতিবারই সবার চেয়ে একটু আলাদা কিছু করার চেষ্টা করি। সেই ধারণা থেকেই মন্দির কমিটির সদস্যরা বৈঠক করে পরিত্যক্ত পানির বোতল দিয়ে গেট বানানোর উদ্যোগ নিই। পরে এলাকার বাসিন্দা সজিব দাস, সাজু দাস ও শিপলু দাসসহ আরও অনেক তরুণ প্রায় ছয় মাস ধরে পানির বোতল সংগ্রহ করে। সঙ্গে কিছু বোতল কেনা হয়েছে। সব মিলিয়ে গেটটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা।


গেট দেখতে আসা মরিয়ম বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাশেই আমাদের বাসা। বোতল দিয়ে গেট নির্মাণের খবর শুনে দেখতে এসেছি। দেখতে বেশ ভালো লাগছে। গেটটি সবার নজর কেড়েছে।

মন্দির কমিটির সভাপতি ভরত দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, পূজার গেটে নতুনত্ব আনতে ও পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ অভিনব কাজটি করা হয়েছে। মানুষ বিষয়টিকে গ্রহণ করেছে দেখে ভালো লাগছে। পূজা শেষে আমরা এই গেটে ব্যবহৃত বোতলগুলো পুড়িয়ে ধ্বংস করে ফেলব। আমরা বলতে চাই এ ধরনের বোতল রাস্তায় কিংবা ড্রেনে না ফেলে তা ধ্বংস করা হোক। যাতে আমাদের পরিবেশটা সুন্দর থাকে।

প্রসঙ্গত, যশোর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত গোরাপাড়ায় ১২০টি হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবার বসবাস করেন। এ পরিবারগুলো নিজস্ব মন্দিরে প্রতি বছর দুর্গাপূজার আয়োজন করে।