ঢাকা,  শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ,

আটচল্লিশেই দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু: প্রধানমন্ত্রী

আটচল্লিশেই দেশ স্বাধীনের সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধু: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ আয়োজিত ৭ মার্চের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, দেশের স্বাধীনতার কথা আপনি কখন থেকে চিন্তা করেন। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ১৯৪৮ সালে যখন মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পাকিস্তানিরা নিয়ে নিয়েছিল, সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওদের সঙ্গে আর থাকবো না।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে দলটির আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।


শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই কিন্তু স্বাধীনতা। একজন নেতা নিজের জীবনের সব বিসর্জন দিয়ে একটি জাতির জন্য, দিনের পর দিন অধিকার বঞ্চিত-শোষিত মানুষের কথা বলতে গিয়ে বারবার কারাবরণ করেছেন। জেলজুলুম, অত্যাচার সহ্য করেছেন। যে লক্ষ্য তিনি স্থির করেছিলেন সেটি সামনে রেখে একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন।


তিনি বলেন, তিনি চুয়ান্ন সালে নির্বাচনও করেছেন, ছাপ্পান্ন সালে তিনি জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। নিয়ম মেনেই কিন্তু এগিয়ে গেছেন। একটি লক্ষ্য স্থির রেখে। যেটা কখনও তিনি মুখে উচ্চারণ করেননি। কিন্তু একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা বা তাদের সংগঠিত করা, ঐক্যবদ্ধ করা, এটা একটি কঠিন কাজ ছিল। সেই কঠিন কাজ তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করে যান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেটাই আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। যে কাজটা তিনি করতে গেলেও করতে দেওয়া হয়নি। ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। কাজেই এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

তিনি বলেন, যারা জয় বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে যারা প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। তারা দেশের উন্নয়ন চায় না। দেশের মানুষের অর্থ-সামাজিক উন্নতি চায় না। তাদের কেন মানুষ ভোট দেবে?

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করবার জন্য, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য সবাইকে কাজ করে যেতে হবে।

ছয় দফা আন্দোলন সংগঠনে মায়ের অবদান

শেখ হাসিনা বলেন, ছয় দফা মানুষের বাঁচার দাবি হিসেবে কিন্তু এত জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করার পর থেকেই আন্দোলন শুরু। আন্দোলন সংগঠিত করার পেছনে আমার মায়ের অনেক অবদান রয়েছে। তিনি (বেগম ফজিলাতুন নেছা) ৭ জুনের হরতাল থেকে শুরু করে সব আন্দোলন সংগ্রামের নেপথ্যে ছিলেন, কিন্তু সক্রিয়ভাবে করেননি। গোপনে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করা, ছাত্রনেতাদের সঙ্গে দেখা করা, আন্দোলন করার সব নির্দেশনা, মিটিং করা সব কিছুই তিনি করতেন। কিন্তু তিনি কখনও প্রকাশ্যে আসেননি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এমনকি ১৯৪৮ সাল থেকে জাতির পিতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানিরা যেসব গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছে সেখানে আমার মাকে কখনও ধরতেই পারেনি। তিনি সবসময় তার পোশাক পরিচ্ছদ পরিবর্তন করে, একটা বোরকা পরে তারপরে গাড়িটা ডেকে, স্কুটারে করে বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রনেতাদের সঙ্গে দেখা করা, আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে দেখা করা, যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া, সেগুলো তিনি করতেন।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা একজন বড় গেরিলা ছিলেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বলতে গেলে তিনি ছিলেন একজন বড় গেরিলা। সেভাবেই তিনি কাজ করেছেন। সে আন্দোলনগুলোকে তিনি যথাযথভাবে গড়ে তুলতে পেরেছেন। ছয় দফার যে দাবিটা, সেটা মানুষের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছিলেন।